একদলীয় সংবিধান দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র হবে না——-নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

রিয়াজ উদ্দিন মাহমুদ / ৭ পোস্ট কাউন্ট
আপডেট শনিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৫

একদলীয় সংবিধানে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশে অসম্ভব বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, মুজিবীয় সংবিধান ছিঁড়ে ফেলে বহুদলীয় সংবিধান রচনা করতে হবে। সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণপরিষদ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ২৪’র গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমাদের সেই সুযোগ তৈরি হয়েছে।

শুক্রবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘মার্চ ফর ইউনিটি অ্যান্ড জাস্টিস’ শীর্ষক ছাত্র সমাবেশ অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধের পর আন্দোলনে নতুন মাত্রা দেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেই আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আন্দোলনের অন্যতম অংশীদার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে এই প্রথম ‘মার্চ ফর ইউনিটি অ্যান্ড জাস্টিস’ শীর্ষক ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে এসেছিল। এ শিক্ষার্থীরা ছাড়া আন্দোলন কোনোভাবেই সফল হতো না। ফলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত এবং দেশ থেকে পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি বন্ধের দাবি তোলেন তারা।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্র বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব। যে সংবিধান আমাদের ট্যাক্সের টাকা বিদেশে পাচার করেছে, অন্যায়ভাবে জেলে আটকে রেখেছে, ৫৩ বছর নিপীড়নের শিকার করেছে-সেই বাহাত্তরের সংবিধানকে ছুড়ে ফেলতে হবে।

তিনি বলেন, বহুদলীয় সংবিধান রচনায় আমাদের সুযোগ তৈরি হয়েছে। দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণপরিষদ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে সংবিধানে তৈরি হবে, সেখানে আমাদের মা-বোনদের অধিকারের প্রশ্নগুলো লেখা থাকবে। আমরা এমন একটি সংবিধান চাই, যেখানে রাষ্ট্রের কাছে গোলামির জিঞ্জিরে আবদ্ধ থাকতে হবে না। আমরা গণপরিষদের মাধ্যমে এমন একটি সংবিধান চাই, যে সংবিধানের মধ্য দিয়ে আর কোনো ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক বলেন, কেউ যদি আমাদের বিচার এবং সংস্কার প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে চায়, দেশীয়-আন্তর্জাতিক কোনো ষড়যন্ত্র করতে চায়; তাহলে তাদের বিরুদ্ধে রাজপথে লড়াই হবে। বাংলাদেশের মাটিতে আমরা রক্ত দিয়েছি, প্রয়োজনে আরও রক্ত দেব। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এ সময় গত সরকারের শাসনামলে যারা খুন হয়েছেন, আয়নাঘরে গিয়েছেন, অন্যায়-অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন; তাদের সবাইকে গণপরিষদ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, আমরা বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করতে চাই। এর জন্য আমাদের প্রয়োজন সংস্কার। এ প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর গণপরিষদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। এর বাইরে অন্যকিছু ভাবার সুযোগ নেই।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, জাতীয় সরকার কারা প্রত্যাখ্যান করেছে? কারা সর্বপ্রথম জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সর্বস্তরের ঐক্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে? আগামীর বাংলাদেশ তাদের অবশ্যই প্রশ্ন করবে।

সূত্রঃ—– যুগান্তর।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর বিভাগ