লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে রাতের খাবার খেয়ে শিশুসহ ৩ পরিবারের ১২ জন অচেতন হয়ে পড়ে। পরে তাদের ঘরের মূল্যবান মালামাল চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
ধারণা করা হচ্ছে, তাদের অনুপস্থিতিতে ঘরে থাকা খাবারের সঙ্গে চেতানা নাশক ওষুধ মিশিয়ে দেওয়া হয়। এতে খাবার খেয়ে অচেতন হয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা মালামাল চুরি করে পালিয়ে যায়।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সদর হাসপাতালে শিশুসহ ৯ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর মধ্যে ৪ জন শিশু, ৪ জন নারী ও একজন পুরুষ।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার চর ফলকন ইউনিয়নের ফলকন গ্রামে শাহজাহান মির্দার বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।
অসুস্থদের মধ্যে মো. শাহজাহান মির্দা (৭০), নুর ভানু (৬৫), পান্না আক্তার (২৭), আকলিমা বেগম (২০), আরমান হোসেন (১০), ইমরান হোসেন (৪), নুসরাত (৪), মরিয়ম (৪), পলি আক্তার (১৬), পিংকি বেগম (২৫) ও মো. নিশান (২৮)।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরুপ পাল বলেন, ৯ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে ২ জনের অবস্থা স্বাভাবিক। অন্যরা এখনো পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। চেতনানাশক বিষ খাইয়ে তাদের অচেতন করা হয়েছে।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কয়েকজন রাতেই সুস্থ হয়েছেন। অন্যরা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত ঘটনাটি নিয়ে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তদন্ত চলছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হওয়া পলি আক্তার জানান, মঙ্গলবার বিকেলে তারা প্রতিবেশী এক বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে যায়। সেখান থেকে ফিরে ঘরে থাকা রান্না করা হাঁসের মাংস দিয়ে খাবার খান তিনি। এরপর আর কিছু মনে নেই তার। চেতনা ফিরে এসে দেখেন তিনি হাসপাতালে।
ভুক্তভোগী শাহজাহান মির্দার ভাতিজা কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, প্রতিবেশী বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে যাওয়ার পর বাড়ি খালি ছিল। এরমধ্যেই দুর্বৃত্তরা ঘরের রান্না করা খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দিয়ে যায়। ৩টি পরিবারের ১২ জন সদস্য খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুমের মধ্যেই তারা অচেতন হয়ে পড়েন। এতে রাতে পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়ি ফিরে একাধিকবার ডাকাডাকি করলেও কারো কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে সবাইকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা তাৎক্ষণিক সবাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুর্বৃত্তরা ঘরে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে।
কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সোহেল রানা জানান, অচেতন অবস্থায় ১২ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে ৯ জনকে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। অসুস্থদের খাবারের সঙ্গে চেতনা নাশক জাতীয় ওষুধ মেশানো ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে রামগঞ্জ উপজেলার লামচর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে খাবারের সঙ্গে চেতনা নাশক ওষুধ মিশিয়ে ৫ জনকে অচেতন করে স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরির ঘটনা ঘটে।