শিরোনামঃ

দেশেই ক্যানসারের ওষুধ উদ্ভাবন!

দৈনিক একালের খবর ডেক্স / ১৫ পোস্ট কাউন্ট
আপডেট মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

সুবর্ণা আক্তার (৪৪)। পেশায় গৃহিণী। থাকেন রাজধানীর কদমতলীর মেরাজনগর এলাকায়। দুই সন্তানের জননী তিনি। স্বামী-সন্তান নিয়ে খুব ভালোই দিন কাটছিল তার। হঠাৎ করে ২০২২ সালে সুখের সংসারে কালো ছায়া হিসেবে নেমে এল মরণব্যাধি ক্যানসার। এরপর তিনি মহাখালীর ক্যানসার হাসপাতালে কেমোথেরাপি নেওয়া শুরু করেন। সেখানে অনেক ভোগান্তির কারণে চারটি নিয়ে রাগ করে কেমোথেরাপি নেওয়া বন্ধ করে দেন। এরপর তার অপারেশন হয়। বাংলাদেশে আসা ভারতীয় ডাক্তারও দেখিয়েছেন। তার পরামর্শে দেশের উন্নত মানের বেসরকারি হাসপাতালে ৩০টি রেডিওথেরাপিও নিয়েছেন। রেডিওথেরাপি দেওয়ার পর এবং ওই হাসপাতালের ডাক্তারের দেওয়া নানা ধরনের ওষুধ খেয়েও তার কোনো উন্নতি হয়নি। দিন দিন অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

ক্যানসার ব্রেস্ট থেকে শরীরের অন্য স্থানেও ছড়িয়ে যায়। সারাক্ষণ তার বুকে অসহ্য যন্ত্রণা হতে থাকে। কোনোভাবেই সেই যন্ত্রণা তিনি সহ্য করতে পারছিলেন না। আর চেহারা এমন হয়েছিল যে, বাড়ির লোকজনও তাকে চিনতে পারছিলেন না। এরই মধ্যে তিনি খোঁজ পান আবু সালেহর উদ্ভাবিত ইবিথেরাপির। আবু সালেহর কাছে যাবেন এমন পরিকল্পনার মধ্যেই মারা যান তার বাবা। যেতে হয় গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। সেখান থেকে ফিরে গত ৪ জানুয়ারি সুবর্ণা ইবিথেরাপি নেওয়া শুরু করেন।

সুবর্ণা বলেন, ‘২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর আমার আব্বু মারা গেছেন। আমি বাড়িতে গেছি। লোকজন আমাকেই জিজ্ঞেস করছেন সুবর্ণা আসেনি ঢাকা থেকে! মানে কেউ চিনছে না আমাকে- অবস্থা এত খারাপ ছিল! সেই অবস্থা থেকে আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। মানুষজনই বলছেন, আমার অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা। অনেক ভালো আছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমার কৌতূহল হলো- ইবিথেরাপি কী? কারেন্টে শক দেবে নাকি? মানে বোঝার চেষ্টা করলাম। তারপর ওনার কাছে গিয়ে ট্রিটমেন্ট নেওয়া শুরু করি। শুরুর এক সপ্তাহের মধ্যে লক্ষ করলাম ব্যথা কিছুটা কমতে শুরু করেছে। পরের সপ্তাহে আরও কমে গেল। ক্যানসারের চিকিৎসা শুরুর পর এর আগে কখনো এত ভালো ফিল করিনি। আমি অনেকটা সুস্থ।’

সুবর্ণা জানান, সকালে ও রাতে দুটি করে ট্যাবলেট ও পানিজাতীয় একটি ওষুধ খাচ্ছেন। আর কয়েকটি ইনজেকশনও দিয়েছেন। সপ্তাহে একটি করে ইনজেকশন দিতে হয়। এটি আট সপ্তাহ দিতে হবে। আরেকটি ইনজেকশন মাসে দুটি করে দিতে হচ্ছে। এই কোর্স শেষ হলে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবেন বলে আশাবাদী।

সুবর্ণার চিকিৎসা এখনো চলমান। তবে আবু সালেহর উদ্ভাবিত ওষুধ সেবনে ইতোমধ্যে অনেকেই ক্যানসার থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন। তাদের একজন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার সম্মানদি ইউনিয়নের দড়িকান্দির আবু বক্করের স্ত্রী জায়েদা বেগম (৬২)। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের দিকে তার জরায়ুমুখে ক্যানসার দেখা দেয়। তখন তার ছেলে মো. শরিফ মুরব্বিদের পরামর্শে রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নিয়ে যান। বিএসএমএমইউতে ছয়টি কেমো এবং ২৫টি রেডিওথেরাপি দেন। এতে তার প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হয়। এরপর তাকে ব্রেকি থেরাপি দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু ভয়ে তার মা আর ব্রেকি থেরাপি নেননি। কারণ এটি অচেতন করে দিতে হয়। এরপর ডাক্তাররা জানান তার ক্যানসার নেই। কিন্তু তার মায়ের প্রস্রাবে সমস্যা হচ্ছিল। প্রস্রাব বেধে যাচ্ছিল।

মাসখানেক পর জায়েদা বেগমের গলা ফুলে গেল। তখন নারায়ণগঞ্জে একজন সার্জারির চিকিৎসক দেখান। এফএনএসি পরীক্ষা করে তিনি নিশ্চিত হন, জরায়ুতে যে ক্যানসারের জীবাণু ছিল গলায়ও সেই ক্যানসারের জীবাণু। বিএসএমএমইউতে মাকে চিকিৎসা করানোর সময় শরিফ এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। সেখানে আবু সালেহর কথা জানতে পারেন। এবার গলায় ক্যানসার শনাক্তের পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন তার কাছে যাওয়ার।

শরীফ বলেন, ‘২০২৪ সালের এপ্রিলের দিকে ওনার কাছে যাই। তিনি তিন মাসের ডোজ দিয়েছিলেন। আলহামদুলিল্লাহ ক্লিয়ার হয়ে গেছে। গলায় যে টিউমার ছিল, ওষুধ খাওয়ার পর তাও মিশে গেছে। অপারেশন লাগেনি। ছয় মাস ধরে মা এখন ভালো আছেন। কোনো ওষুধ লাগছে না। তিন ডোজে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন।’

আবু সালেহর ওষুধ সেবনে ২০১৭ সালে সুস্থ হয়েছেন নবাবগঞ্জের বন্যা আক্তার (৩৫)। তার হাত ও পায়ের আঙুলে ব্যাসাল সেল ক্যানসার ছিল। ফোর্থ স্টেজে ছিল। তার অসহ্য যন্ত্রণা হতো। ১১ মাস তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে ডাক্তার দেখিয়েছেন। কিন্তু কিছুতে কিছু হচ্ছিল না। শেষে দুই মাস আবু সালেহর ওষুধ খেয়ে তিনি এখন পুরোপুরি সুস্থ। বন্যা বলেন, ‘আমি বেঁচে থাকব এটি কখনোই ভাবিনি। এখন আমি পুরোপুরি সুস্থ আছি। আমার আর কোনো সমস্যা হয়নি।’

আবু সালেহর উদ্ভাবিত ওষুধ সেবনে এ পর্যন্ত মুমূর্ষু অবস্থার বিভিন্ন বয়সী বিভিন্ন স্টেজের ৩০ জনের বেশি ক্যানসারের রোগী সুস্থ হয়েছেন। যাদের শরীরে ক্যানসার কোষ ধ্বংসের পর তা আর ফিরে আসেনি। এদের কেউ লিভার, কেউ গলব্লাডার, কেউ স্টমাক, কেউ কেউ ইসোফেগাল, কোলো-রেক্টাল, ব্রেস্ট, মাল্টিপোল মাইয়েলোমা, বি-সেল অ্যাকিউট লিউকেমিয়া, জিহ্বা এবং ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মাত্র দেড় বছরেই এই ওষুধ বাজারে আনা সম্ভব বলে দাবি করেছেন গবেষক আবু সালেহ।

ওই গবেষকের দাবি, দীর্ঘ কয়েক বছরের গবেষণায় এই ওষুধে প্যালিয়াটিভ ম্যানেজমেন্টের রোগীও সুস্থ হয়েছেন। যাদের সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল একেবারেই ক্ষীণ। সুস্থ হওয়া রোগীর মধ্যে ১১ জনই ছিলেন প্যালিয়াটিভ ম্যানেজমেন্টের রোগী।

আবু সালেহ বলেন, ইবিথেরাপি অত্যন্ত ব্যয় সাশ্রয়ী। এর সফলতার হার গড়ে প্রায় ৯৫ শতাংশ। প্রাইমারি থেকে প্রথম স্টেজের ক্যানসার ৩ থেকে ৪ সাইকেল (সুস্থতার গড় হার ১০০%), দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় স্টেজের ৪ থেকে ৬ সাইকেল (সুস্থতার গড় ৮০-৯০%) এবং প্যালিয়াটিভ স্টেজের ৬ হতে ৮ সাইকেল (১ সাইকেল = ১৫ দিন) ওষুধ গ্রহণে সম্পূর্ণরূপে ক্যানসার সেরে যায় (সুস্থতার গড় হার ৫০-৫৫%)। প্যালিয়াটিভ স্টেজের যাদের পুরোপুরি না কমে তাদের দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার সম্ভাবনা তৈরি হয়। ইবিথেরাপির ওষুধগুলো ওরাল ও ইনজেক্টেবল উভয় ফর্মেই হয়। ওষুধটি বায়ো-সিন্থেসিস এক্সট্র্যাক্ট ফ্রম কেমিস্ট্রি থেকে উদ্ভাবিত হয়েছে বলে এর নামকরণ হয়েছে ইবিথেরাপি। ওষুধটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ।

বিজ্ঞানী আবু সালেহ বিএসসি (ম্যাক. অ্যান্ড প্রোডাকশন) এবং বায়োটেকনোলজিতে লেখাপড়া করেছেন। তিনি প্যারিস কনভেনশন ফর দ্য প্রটেকশন অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রপার্টি অ্যান্ড প্যাটেন্ট করপোরেশন ট্রিটি-১৯৭০ ওয়াশিংটনের আওতায় দুটি আবিষ্কারের জন্য আন্তর্জাতিক প্যাটেন্ট লাভ করেন। যার নম্বর যথাক্রমে ১৭৫/২০১১/১০০৫৩৪৫ এবং ১৯৫/২০১২/১০০৫৪৩৪।

একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ‘ওষুধ নয়- খাদ্যেই সুস্থতা’ প্রকল্পে ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নির্বাহী গবেষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে তিনি নিজে ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হন। তখন তার মাথায় আসে এটি আবিষ্কারের বিষয়টি। তারপর তিনি কাজ শুরু করেন। ওষুধের সব দিক পরীক্ষা করে তারপর প্রথমে নিজের ওপর প্রয়োগ করেন। আর তাতে তিনি সুস্থ হয়ে যান।

তিনি বলেন, ‘গবেষণার নানা পর্যায়ে দেখতে পাই যে বায়োসিন্থেসিস প্রোটিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, এক্লারাবিসিন অ্যান্টি-প্রলিফারাটিভগুলো ডিএনএতে কার্যকর রূপে প্রোটিন-অ্যানকোডিং তথ্যগুলো বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং আরএনএ সেই তথ্যানুযায়ী কোষে নির্দিষ্ট মাত্রায় প্রোটিন সংশ্লেষণে সক্ষম করে তোলে। পাশাপাশি ডিএনএকে মেরামতে সাহায্যসহ ক্যানসারের অগ্রগতিকে দমন করে এবং পুনঃক্যানসারের সৃষ্টিতে বাধা দেয়। বায়োসিন্থেসিস প্রপার্টিগুলোর ক্যানসার কোষের ওপর এই কর্মক্ষমতায় আমি উদ্বুদ্ধ হই এবং এগুলোকে নিয়ে আরও উচ্চতর গবেষণা শুরু করি।’

আবু সালেহ বলেন, ‘উদ্ভাবনী তথ্যটি বাস্তবায়ন করার জন্য কয়েকজন সহ-গবেষক ও ইউনিভার্সিটির একাধিক অধ্যাপকের সমন্বয়ে একটি গবেষণা টিম গঠন করি। গবেষণা টিমের গবেষণালব্ধ ফলাফলগুলোকে পুনরায় সায়েন্স ল্যাবরেটরিসহ একাধিক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বারবার ক্রস চেক করিয়ে নিতাম। আর এভাবেই চলতে থাকে গবেষণা। একপর্যায়ে সফল হই। শুধু ব্রেন ক্যানসার, সারকোমা ক্যানসার, হাড়ের ক্যানসার উদ্ভাবিত ওষুধে কার্যকর কি না, তা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়নি এখনো। এ বিষয়ে গবেষণাটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

ক্যানসার রোগীর অপারেশন, কেমো, রেডিওথেরাপিসহ নানা ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। কেমোথেরাপি সম্পর্কে এই গবেষক বলেন, ‘কেমোথেরাপির ওষুধগুলো কোষের নিউক্লিয়াসসহ ডিএনএ ও আরএনএর কর্মক্ষমতা হ্রাস করে কোষ বিভাজনে বাধা দেয় অর্থাৎ নিউক্লিয়াসে প্রোটিন সংশ্লেষণে কৃত্রিম বন্ধ্যত্বের সৃষ্টি করে এবং কোষ চক্রে ডিএনএর প্রভাব রহিত হয়ে যায়। ফলে আরএনএকে ডিএনএ তখন কোনো সুস্পষ্ট প্রতিলিপি বা সংকেত পাঠাতে পারে না, ফলে ধীরে ধীরে তখন কোষের মৃত্যু ঘটে এবং সেই সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও হ্রাস পায়। এ ছাড়া কেমোথেরাপি অস্থিমজ্জা কোষ, রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনায় আক্রমণ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন এবং ধ্বংসযজ্ঞ চালায়! ফলে ফুসফুস, লিভার, হৃৎপিণ্ড, স্টমাক, কোলন ইত্যাদি অঙ্গে প্রদাহ তৈরি করে! এ ছাড়া মস্তিষ্কের স্নায়ুরজ্জুর স্নায়ু কোষের আবরণের ক্ষতিসাধন এবং ভাসকুলাইটিস তথা রক্তবাহী শিরা-উপশিরা, ক্যাপিলারিসহ ইত্যাদিতে প্রদাহ সৃষ্টি করে এগুলোকে সংকুচিত করে দেয়। ফলে কেমোথেরাপি চলমান কিংবা কেমো-পরবর্তী অবস্থায় শরীরের নানা অঙ্গে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ে, যা মেটাস্টিটিস নামে পরিচিত।’

তিনি বলেন, ইবিথেরাপির ওষুধগুলো কেমোথেরাপির ঠিক বিপরীত প্রক্রিয়ায় কর্মসম্পাদন করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনাসহ কোষ চক্রের দুর্বলতা এবং অসংগতিগুলোকে দূর করে নিউক্লিয়াস বা অর্গানেলের প্রোটিন সংশ্লেষণ সক্ষমতাকে পুনর্গঠন করে। ফলে ডিএনএ তার চাহিদামতো নিউক্লিয়াস থেকে প্রোটিনের জোগান পায় এবং আরএনএকে তখন সে আরও সুস্পষ্টরূপে প্রতিলিপি বা সংকেত পাঠাতে পারে। ফলে দেহের কোষ গঠিত রোগসহ টিউমার, ক্যানসার ইত্যাদি সৃষ্টি হতে বাধা দেয় এবং রোগটিকে সারিয়ে তোলে। ইবিথেরাপি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ বিধায় দুর্বল, অতিদুর্বল এবং শিশু, বয়স্ক সব মানুষই এই চিকিৎসা নিতে পারেন।

উদ্ভাবিত ওষুধটি দেহের কোনো অঙ্গে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে কি না, তা দেখা হয় ২০২২-এর এপ্রিল-অক্টোবর পর্যন্ত। ট্রায়ালের শিরোনাম ছিল ‘সেফটি অ্যান্ড টক্সিসিটি স্টাডিজ উইথ মাইক্রোবায়োলজিক্যাল অ্যানালাইসিস অব কমবাইন্ড সিওয়ান অ্যান্ড সিটু হারবাল ফর্মুলেশন’। এই ট্রায়ালে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট থেরাপিউটিক ডোজে ওষুধটি গ্রহণে লিভার, কিডনি, হার্ট, টেস্টোস্টোরেন, থাইরয়েড হরমোন, রক্তে গ্লুকোজ লেভেলসহ সামগ্রিক ব্লাড প্যারামিটারগুলোই পুরোপুরি সুস্থ থাকে। কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না।

এ ছাড়া ইঁদুরের ওপর আরেকটি ট্রায়াল দেওয়া হয় ভিন্ন আরেকটি সরকারি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। এই ওষুধটি ক্যানসার কোষ ধ্বংস করতে পারে কি না, করলে তা কত শতাংশ এবং ওষুধ প্রয়োগে শরীরের কোনো অঙ্গে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে কি না, যদি না ফেলে তাহলে কোন কোন অরগানকে পুনঃপ্রতিস্থাপন করে বা কর্মক্ষম করে তোলে এবং ব্লাড প্যারামিটারগুলোর ওপর কতটুকু প্রভাব ফেলে তা দেখা হয়। তাতে দেখা যায়, উদ্ভাবিত ওষুধটি কোনো প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই ক্যানসারের কোষ ধ্বংস করে। ওষুধ প্রয়োগের কারণে ব্লাড প্যারামিটার আগের তুলনায় ভালো কাজ করে। কিডনি, লিভার, হার্ট, টেস্টিস ইত্যাদি অরগানের ওপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না।

বিজ্ঞানী আবু সালেহ বলেন, ‘২০১৯ সালে এ বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার জন্য অনেক ঘোরাঘুরি করি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরেই ঘুরেছি। কিন্তু বিষয়টি কাউকে বোঝাতে পারিনি। তখন যদি তারা বুঝতেন বা দেখতে চাইতেন, আমি কী করেছি। তাহলে এখন ওষুধটি বাজারে থাকত। বাজারে এলে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা খরচে একজন রোগী সুস্থ হয়ে যাবেন। আমি আপনাদের মাধ্যমে সরকারকে বলব, তারা বিষয়টি একটু বিবেচনায় নিয়ে দেখুক।’

আগামী সেপ্টেম্বরে বাজারে আসতে পারে রাশিয়ার টিকা। এই টিকা শুধু ক্যানসার আক্রান্তদের শরীরেই প্রয়োগ করা যাবে। বাংলাদেশে এর একটি টিকার দাম পড়বে অন্তত ২১ থেকে ২২ লাখ টাকা। কিন্তু আবু সালেহর উদ্ভাবিত ওষুধে খচর পড়বে তার তুলনায় অনেক কম।
সূত্রঃ—– খবরের কাগজ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর বিভাগ